নেই পড়ুয়া, স্কুল বাঁচাতে আর্জি কিন্তু কেন এমন হাল উৎকলমনি গোপবন্ধু প্রাথমিক স্কুলের!

জামুরিয়া: শিক্ষকেরা নিজেদের মধ্যে আড্ডা দিচ্ছেন। কিন্তু ক্লাসে যাওয়ার নাম নেই। কারণ, পড়ুয়াই যে নেই। বেশ কয়েক বছর ধরে পড়ুয়ার অভাবে এমনই ছবি জামুড়িয়ার নিউকেন্দায় ওড়িয়া মাধ্যম প্রাথমিক স্কুলে। শিক্ষক ও ওড়িয়াভাষী মানুষদের দাবি, সরকারি উৎসাহের অভাব এবং এলাকায় ওড়িয়াভাষী মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়ায় উৎকলমণি গোপবন্ধু প্রাথমিক স্কুলটির এমন হাল।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে চার জন শিক্ষক রয়েছেন। খাতায়-কলমে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৩ জন। তারাও স্কুলে আসে না। পড়ুয়া না থাকায় ২০১৬ সাল থেকে স্কুলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড-ডে মিল। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে খাসকেন্দার খনিকর্মী আবাসনে ২৩০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে স্কুলটি চালু হয়। ২০১০ সালে পড়ুয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৮৯ জনে। কিন্তু তার পরে থেকেই সংখ্যাটা দ্রুত কমতে থাকে।
বঙ্গ-উৎকল সমাজ সাংস্কৃতিক মঞ্চের জেলা সম্পাদক প্রহ্লাদ বিসোয়াই জানান, “নয়ের দশকে তৎকালীন বাম সরকারকে স্কুল তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।’’ প্রথমে এই এলাকার খাসজমিতে ২০০০ সালে স্কুল ভবনের শিলান্যাস হয়। কিন্তু সেই সময়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষের আপত্তিতে ওই জমিতে ভবন তৈরি করা যায়নি। সেই সময়ে পাঁচ জন ওড়িয়াভাষী খনিকর্মীর আবাসনে স্কুল শুরু হয়। পরে বিধায়ক তহবিল এবং অন্যান্য সরকারি সহযোগিতায় কেন্দা ফাঁড়ির কাছে স্কুলের নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়।
কিন্তু প্রহ্লাদবাবুর অভিযোগ, ‘‘প্রতি বছর পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছিল। কিন্তু রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরেই বই পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। দু’বছর কোনওক্রমে চললেও বর্তমানে স্কুলের সব পরিকাঠামোই বেহাল।’’ বাবুলি প্রধান নামে এক অভিভাবকেরও প্রশ্ন, ‘‘ওই স্কুলে বই মেলে না। ছেলেমেয়েকে পাঠাব কোন ভরসায়।’’
স্কুলের শিক্ষিকা অনিতা বর্ধন, সঙ্ঘমিত্রা মল্লিকদের দাবি, পড়ুয়া ভর্তির জন্য তাঁরা বাড়ি বাড়ি দরবার করছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। প্রধান শিক্ষক রোহিতকুমার বেহেরা বলেন, “স্কুলটা বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি। স্কুলের ভবিষ্যৎ এখন শিক্ষা দফতরের হাতে। একটাই আবেদন, স্কুলটা বাঁচান।”
কিন্তু কেন এমন হাল? এর মূল কারণ, এক সময়ে খনি এলাকায় বহু ওড়িয়াভাষী মানুষ জীবিকা সূত্রে থাকতেন। কিন্তু তাঁরা অবসর নেওয়ায় সেই সংখ্যাটা বর্তমানে তলানিতে ঠেকেছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জামুড়িয়া ২ নম্বর ব্লক সভাপতি মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এক দশক আগে খাসকেন্দা ও ইস্টকেন্দা এলাকায় তিনশোটি ওড়িয়া পরিবার বাস করত। বর্তমানে সেই সংখ্যাটা মেরেকেটে ৮০টি।

 বিডিও (জামুড়িয়া) অনুপম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুলটিকে বাঁচাতে ওড়িয়ার বদলে অন্য কোনও মাধ্যম করা যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’

source-Anandabazar patrica

Comments

Popular posts from this blog

কিনুন মাত্র 5999 টাকায় আইফোন , কিন্তু কিভাবে জানতে ক্লিক করুন।

ফুড ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে কৃষকদের ক্ষমতাবান করতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

bengali news live